কোন নতুন অভিভাবকের পক্ষে প্রথমবার তাদের বাচ্চাকে খাওয়াতে যাওয়া খুবই উত্তেজক অভিজ্ঞতা কিন্তু এটা ভয়ের বা বিপজ্জনকও হতে পারে, বিশেষ্ত আপনি যদি না জানেন যে ঠিক কি করতে হবে। বাচ্চাকে ঢেকুর তোলানো আপনার জামাকাপড়ের পরিচ্ছন্নতার বিনিময়ে প্রাপ্ত একটি মজার শিক্ষা। যখন বাচ্চারা ঢেকুর তোলে তারা তাদের পাকস্থলিতে জমা হওয়া বাতাস বের করে দেয়। এর ফলে তারা আরাম বোধ করে, তাদের শ্বাসবন্ধভাব কেটে যায় এবং তারা আরো বেশী সময় ধরে খেতে পারে।
১। বাচ্চাকে আপনার বুকের সঙ্গে চেপে ধরুন
বাচ্চাকে এমনভাবে ধরুন যেন তার চিবুক তার মায়ের কাঁধের উপর ঠেকানো থাকে। আপনার অবস্থান ঠিক আছে কিনা বা আপনার বাচ্চার মাথা ঠিকভাবে রাখা আছে কি না জানার জন্য আপনি আয়নাতেও দেখে নিতে পারেন। বাচ্চাকে এক হাতে ধরে রাখুন অন্য হাত দিয়ে ধীরে ধীরে তার হাতে আদর করুন বা ঘষতে থাকুন। রকিং চেয়ারে বসে ধীরে ধীরে বাচ্চার পিঠে হাত বোলালে ঢেকুর তোলায় সাহায্য হতে পারে।
২। বাচ্চাকে আপনার কোলে বসান এমনভাবে যেন তার মুখ আপনার থেকে দূরে থাকে
নিজের হাত দিয়ে বাচ্চাকে ধরে রাখুন, হাতের পাতা শিশুর বুকে রাখুন এবং আপনার হাতের আঙ্গুল দিয়ে নরম করে ধরে থাকুন বাচ্চার থুতনি এবং চোয়াল (লক্ষ্য রাখুন যেন আপনার আঙ্গুল বাচ্চার থুতনিতে থাকে এবং গলাতে চলে না যায়) আপনার অন্য হাত দিয়ে বাচ্চার পিঠে ধীরে ধীরে চাপড় দিন।
৩। বাচ্চাকে আপনার পায়ের উপর উপুড় করে শোওয়ান
আপনার শরীরের সঙ্গে লম্বভাবে পায়ের উপর শিশুকে উপুড় করে শোওয়ান। শিশুর চিবুক এবং চোয়াল এক হাতে ধরে রাখুন। আস্তে আস্তে বাচ্চার পিঠের উপর আপনার অন্য হাত দিয়ে চাপড় দিন। খেয়াল রাখুন যেন শিশুর মাথা তার শরীর থেকে একটু উপরে থাকে, যাতে রক্ত দ্রুত তার মাথায় না পৌঁছে যায়। শিশুর পিঠে নিজের অন্য হাত দিয়ে ধীরে ধীরে চাপড় মারুন বা হাত বোলাতে থাকুন।
খাওয়ানোর সময় যদি মনে হয় যে বাচ্চা খুব অস্থির হচ্ছে বা ছটফট করছে তবে খাওয়ানো বন্ধ করুন, তাকে ঢেকুর তোলান এবং তারপর খাওয়ান। মাতৃস্তন পান করার সময় প্রতিবার স্তন পরিবর্তনের সময় বা প্রতি ৫ মিনিট অন্তর বাচ্চাকে ঢেকুর তোলান। যদি আপনার বাচ্চা ঢেকুর না তোলে তবে খাওয়ানোর আগে বাচ্চার অবস্থান পরিবর্তন করে আবার ঢেকুর তোলাতে চেষ্টা করুন। খাওয়ার সময় শেষ হয়ে যাওয়ার পর আপনার বাচ্চাকে ঢেকুর তোলাতে ভুলে যাবেন না। যখন আপনার বাচ্চা একটু বড় হয়ে যাবে, তখন সে ঢেকুর না তুললে চিন্তা করার কারণ নেই, এর অর্থ এই যে আপনার শিশু অতিরিক্ত বাতাস গিলে না নেওয়ার প্রক্রিয়া শিখে গেছে।
প্রতিটি বাচ্চাই ভিন্ন ভিন্ন প্রকৃতির হয়, সেজন্য আপনাকে বুঝে নিতে হবে যে খাওয়ার পর আপনার বাচ্চাকে ঢেকুর তোলানোর সবথেকে সহজ এবং কার্যকরী উপায় কোনটি। আপনি যেহেতু অভিভাবকত্বে নতুন, আপনি ঢেকুর তোলানোর জন্য বিভিন্ন উপায় পরীক্ষা করে দেখতেই পারেন। বাচ্চার কান্নার খরণ শুনে বাচ্চার প্রয়োজন ও অসুবিধা বুঝতে পারা কঠিন নয়। নিজের সহজাত বোধের উপর আস্থা রাখুন।